ইতিহাস গড়লেন ‘চাষার ব্যাটা’ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। এই নিয়ে ৭ বার মন্ত্রী হলেন তিনি। বামফ্রন্টের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন রাজ্জাক। ১০ বারের এই বিধায়ক এবার তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রিসভার সদস্য। জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছিন তিনি। এবার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায়ও সেই ট্র্যাডিশন ধরে রাখলেন রাজ্জাক মোল্লা।
রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭২ সালে প্রথম ভাঙড় থেকে লড়ে বিধায়ক হন তিনি। সেবার ভোটে হারেন স্বয়ং জ্যোতি বসু। কিন্তু জিতেছিলেন রাজ্জাক। ১৯৭৭ সালে বদলে যায় তাঁর কেন্দ্র। ক্যানিং পূর্ব।
কিন্তু সেখানকার মানুষও ফেরাননি তাঁকে। পরের ভোটেই জিতে মন্ত্রী হন ‘চাষার ব্যাটা’। একসময় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের মন্ত্রী হন তিনি। ১৯৮২ থেকে ২০০৬ টানা ছ’বার মন্ত্রী হন রাজ্জাক। ২০০০ সালে বদল হয় মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বদলায়নি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের মন্ত্রীর নাম। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের ভোটে হেরে যান তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু, সেবারও হারেননি রাজ্জাক। তবে, এরপরই রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায় বামফ্রন্টে। সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ প্রশ্নে বুদ্ধদেবের সঙ্গে মতবিরোধটা শুরু হয়েছিল ২০০৭-এই। ধীরে ধীরে তা চরম আকার নেয়। ফেব্রুয়ারি ২০১৪। অবশেষে দল বিরোধী কথা বলার অভিযোগে বহিষ্কৃত হন রাজ্জাক মোল্লা।
ওই বছরই ১৮ অক্টোবর ভারতীয় ন্যায় বিচার পার্টি নামে নতুন দল গড়েন। কিন্তু, দু’বছর পর সেখান থেকেও বহিষ্কৃত হতে হয় তাঁকে। কারণ, ততদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেকটাই কাছাকাছি চলে এসেছেন রাজ্জাক মোল্লা। ফেব্রুয়ারি ২০১৬। অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভাঙড়ের তাজা নেতাকে টপকে রাজ্জাক মোল্লাকেই প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীকোন্দলকে হারিয়ে ভাঙড়ে ঘাসফুল ফোটান ‘চাষার ব্যাটা’। তার পুরস্কার হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রিসভায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতরের মন্ত্রী হলেন তিনি।