একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে উচ্চ আদালত। কিন্তু রায় কার্যকর হতে আর মাত্র তিনটি প্রক্রিয়া বাকি। এই তিন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই রায় কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
আজ বুধবার সকালে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ। রায় ঘোষণার পর এখন অপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ রায়ের।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন মতিউর রহমান নিজামী। এই রিভিউ আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হবে। শুনানি শেষে তাঁর আবেদন খারিজ হলে এ বিষয়ে রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই নিজামীর আদালতের সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবে। এর পর তাঁর সামনে আরেকটি পথ খোলা থাকবে। আর সেটি হলো রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা। রাষ্ট্রপতি যদি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন, তাহলে যেকোনো দিন তাঁর ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।
কারাবিধি অনুযায়ী, একজন দণ্ডিতের রায় রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার রায় হওয়ার পর থেকে তিনি প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য সাত দিন সময় পেয়ে থাকেন। এর পর তাঁকে ২১ দিনের আগে নয় এবং ২৭ দিনের বেশি নয়, এমন সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
অর্থাৎ নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ, পুনর্বিবেচনার আবেদন ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা—এ তিনটি প্রক্রিয়া বা ধাপ রয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পাওয়ার পর সেই কপিতে স্বাক্ষর করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা। এর পর তাঁরা সই করবেন নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানায়। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠানো হবে কারাগারে। সেখানে নিজামীকে তাঁর মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হবে।
এর মধ্যে যদি পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া না হয় বা রাষ্ট্রপতি ক্ষমা না করেন, তাহলে যেকোনো দিন রায় কার্যকর করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।