নিজের অভিষেক আসরে মুস্তাফিজুর রহমান যেন পরশ পাথর। তার ছোয়ায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ আকাশ ছুলো। রোববার আইপিএলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইপিএলের শিরোপা জিতেছে মুস্তাফিজের হায়দরাবাদ।
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিড ওয়ার্নার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে পাহাড় সমান ২০৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বেঙ্গালুরু। ফলে ৮ রানের দারুণ এক জয়ে শিরোপা জিতে নেয় হায়দরাবাদ।
## কোমর দুলিয়ে নাচলেন মুস্তাফিজ
## যে দুটি জিনিসকে ভয় পান মুস্তাফিজ
ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৩ রান সংগ্রহ করেন শিখর ধাওয়ান ও ডেভিড ওয়ার্নার। এরপর জুভেন্দ্র চাহালের বলে ক্রিস জর্দানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ধাওয়ান (২৮)। এরপর হেনরিকসকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় স্কোরকে ৯৭ রান পর্যন্ত টেনে নেন ওয়ার্নার। হেনরিকস আজ অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। তিনি মাত্র ৪ রান করে আউট হন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে যুবরাজের সঙ্গে ২৮ রান তোলেন ওয়ার্নার। এরপর দলীয় ১২৫ রানে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। যাওয়ার আগে ৩৮ বলে ৮চার ও ৩ ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলে যান। এরপর যুবরাজ সিংয়ের ৩৮, বেন কাটিংয়ের ১৫ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় করা অপরাজিত ৩৯ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৮ রান সংগ্রহ করে অরেঞ্জ আর্মিরা।
বল হাতে বেঙ্গালুরুর ক্রিস জর্দান ৩টি উইকেট নেন। শ্রীনাথ অরবিন্দ ২টি উইকেট নেন। একটি নেন চাহাল।
২০৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইল। ১১তম ওভারে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৭৬ রান। তার ৩৮ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল চারটি চার আর আটটি ছক্কা। ওপেনিং জুটি থেকে কোহলির সঙ্গে ৬৩ বলে ১১৪ রান তোলেন গেইল। ২৫ বলে অর্ধশতকের দেখা পান ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব।
গেইল ফিরে গেলেও কোহলির ব্যাট থেমে থাকেনি। ৩২ বলে ভারতীয় এই রানমেশিন অর্ধশতক হাঁকান। ৫টি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৪ রান করে বারিন্দ্রার স্রানের বলে বোল্ড হন কোহলি।
মুস্তাফিজ নিজের প্রথম ওভারে ৪ রান খরচ করেন। তার করা দ্বিতীয় ওভারে বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানরা আরও ১২ রান তুলে নেয়।
কোহলির বিদায়ের পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন এবিডি ভিলিয়ার্স এবং লোকেশ রাহুল। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই বিপুল শর্মার বলে হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভিলিয়ার্স (৫)। ভিলিয়ার্সের বিদায়ে মাঠে নামেন অজি তারকা শেন ওয়াটসন। বেন কাটিং ইনিংসের ১৬তম ওভারে বোল্ড করেন ১১ রান করা রাহুলকে।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে নিজের তৃতীয় ওভার করেন মুস্তাফিজ। সেই ওভারের তৃতীয় বলে দুর্দান্ত এক স্লোয়ার কাটারে ওয়াটসনকে কাবু করেন মুস্তাফিজ। হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন ৯ বলে ১১ রান করা ওয়াটসন। মুস্তাফিজের তৃতীয় ওভার থেকে বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানরা তুলে নেন ১০ রান।
১৯তম ওভারে আবারো বোলিং আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। তার করা প্রথম বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্টুয়ার্ট বিন্নি। দ্বিতীয় বলে ক্রিস জর্ডান ক্যাচ তুলে দিলেও বারিন্দ্রান স্রানের হাত ফসকে বল বেরিয়ে যায়। মুস্তাফিজের শেষ ওভারে বেঙ্গালুরু নেয় আরও ১২ রান।
ভুবনেশ্বর কুমারের করা শেষ ওভারে জয় পেতে হলে বেঙ্গালুরুর দরকার ছিল ১৮ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। তৃতীয় বলে রান আউট হন ক্রিস জর্ডান। শচীন বেবি ১০ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরুর ইনিংস থামে ২০০ রানে।
হায়দ্রাবাদের হয়ে ৪ ওভার বল করে ৩৭ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে ৩৫ রান খরচায় দুটি উইকেট পান বেন কাটিং। ভুবনেশ্বর ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।