মানুষ যখন রাগান্বিত হয় বা ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়, তখন একে অপরকে কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, ফাসিক তথা বেঈমান বলে আক্রমণ করে। অথচ যেই ব্যক্তি যা নয় তাকে ঐ নামে ডাকা মারাত্মক গোনাহ। এ গোনাহ থেকে হিফাজত থাকতে মানুষকে যে কাজগুলো পরিহার করতে হবে তুলে ধরা হলো-
মানুষ ঈমান হরণকারী কাজের মধ্যে একটা হচ্ছে কুফর। সাধারণত কোনো কিছুকে গোপন করেই হচ্ছে কুফর। এছাড়া না-শুকরি ও অকৃতজ্ঞতাকেও কুফর বলা হয়। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, যে সমস্ত বিষয়ে বিশ্বাসস্থাপন করা ফরজ, এর যে কোনো একটি অস্বীকার করাই কুফর।
যেমন- ঈমানের সার কথা হচ্ছে যে, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ওহির মাধ্যমে নবি-রাসুলগণ উম্মাতকে যে শিক্ষাদান করেছেন, সেগুলোকে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করা এবং সত্য বলে জানা। কোনো ব্যক্তি যদি এ শিক্ষামালার কোনো একটিকে হক বলে না মানে তবে সে কাফের।
ইসলামিক স্কলারগণ কুফরের ৫টি বিষয় তুলে ধরেছেন-
১. কুফরে তাকজিবঃ নবী-রাসুলগণকে মিথ্যা সাব্যস্ত করা।
২. কুফরে ইসতিকবারঃ অহংকারের কারণে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের হুকুম অমান্য করা এবং গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানানো।
৩. কুফরে ই’রাজঃ পয়গাম্বরদের (নবী-রাসুল) সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী কোনোটাই না বলে বরং উপেক্ষা করা এবং এ বিষয়ে মনোযোগ না দেয়া।
৪. কুফরে ইরতিয়াবঃ পয়গাম্বরদের (নবী-রাসুল) সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী কোনোটাই বিশ্বাস না করা বরং সন্দেহ ও সংশয় করা। এটাও কুফর।
৫. কুফরে নিফাক্বঃ মুখে ঈমানের কথা স্বীকার করা এবং অন্তরে অস্বীকার করা।
তছাড়া এ বিষয়গুলোর অবিশ্বাসেও মানুষ ঈমান হারা হয়ে যায়ঃ
১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা।
২. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে মধ্যস্ততাকারি রূপে কাউকে স্থাপন করা
৩. শিরককারীকে কাফের মনে না করে সঠিক পথের অনুসারী বলে মনে করে
৪. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সিদ্ধান্ত ও পথ নির্দেশনার চেয়ে অন্যের সিদ্ধান্তকে বেশি উত্তম মনে করা।
৫. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো একটি হুকুমকে ঘৃণা করা।
৬. কুরআন নিয়ে ঠাট্টা ও উপহাস করা।
৭. যাদু টোনা করা কুফরি। এর ফলে মনবতার শান্তি ও সুসম্পর্ক বিনষ্ট করা।
৮. মুসলমানদের বিপক্ষে মুশরিকদের সহায়তা করা।
৯. এমন বিশ্বাস রাখা যে, কিছু ব্যক্তি আল্লাহ এবং রাসুলের প্রণীত আইন ভঙ্গ করার এখতিয়ার রাখে।
১০. আল্লাহ প্রদত্ত এই দ্বীন ইসলামকে পুরোপুরি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা।