একজন উদ্যোক্তা যখন একটি অভিনব ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামেন তখন তার প্রয়োজন অর্থ, মেধা, অভিজ্ঞতা এবং উদ্যম। ব্যবসাটি শুরু করার পর প্রাথমিক পর্যায়ে যখন অর্থ লগ্নির প্রয়োজন পড়ে তখন ওই উদ্যোক্তা তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও নিকটাত্মীয়দের কাছে ধর্না দেন। কিন্তু ওই নতুন ব্যবসার মাধ্যমে যদি নতুন নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, ব্যবসায় যদি ব্যাপক সফলতার ইঙ্গিত মেলে তাহলে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই বড় ধরনের প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ পরিবার-পরিজনদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থে মেটানো সম্ভব হয় না। তখনই ওই নতুন উদ্যোক্তা দ্বিতীয় বা তৃতীয় উৎসের খোঁজ করেন।

আমাদের দেশে সাধারণত এ ধরনের প্রয়োজনে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের শরনাপন্ন হয়। কিন্তু ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদের জন্য টাকা দিতে চায় না, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তাদের সব ঋণ কার্যক্রমই স্বল্পমেয়াদী। তাছাড়া ব্যাংকগুলো কোম্পানির কাছ থেকে তাদের লগ্নিকৃত অর্থ সময়মতো ফেরত পাওয়ার গ্যারান্টি পেলেই ঋণ দেওয়ার কথা ভাবে। এর বাইরে, কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের পূর্ববর্তী ব্যবসায়িক সফলতা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হয়। এরপর যদি ওই ব্যবসা ভবিষ্যতে ভাল করবে বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস জন্মে তবেই তারা ঋণ ছাড়ের কথা চিন্তা করে।

এ তো গেল ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্ত। ঋণ পাওয়ার পর শুরু হয় শর্তের বেড়াজাল মেনে চলার ঝক্কিঝামেলা এবং সময়মতো ঋণ ফেরত দেওয়ার চাপ। বাংলাদেশে এই চাপ আরও বেশি। কারণ এদেশে ব্যাংকঋণের বিপরীতে উচ্চহারে সুদ দিতে হয়। উচ্চহারে সুদসহ ঋণের টাকা জমা দেওয়া এবং পরিচালনা ব্যয় মেটাতে গিয়ে নতুন ব্যবসাগুলো উঠে দাঁড়াতে পারে না। অনেক সময় নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসার মূলধনে হাত দিতে বাধ্য হন।

অন্যদিকে, ভেঞ্চার ক্যাপিটালে ব্যাংকের মতো এতসব শর্তের বালাই নেই। কারণ, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিজ থেকেই নতুন নতুন ব্যবসা পরিকল্পনার খোঁজ করে। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের কাজ হচ্ছে অভিনব এবং সৃজনশীল কিন্তু সম্ভাবনাময় উদ্যোগের সন্ধান করা এবং বিনিয়োগ করা। যেসব স্টার্ট-আপ কোম্পানির দ্রুত উন্নতির সম্ভাবনা আছে সেখানে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের যোগান দেয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। তাই ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে বলা হয় স্টার্ট-আপ কোম্পানির জন্য বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল মূলত একটি বেসরকারি অংশীদারী প্রতিষ্ঠান। এটি সরকারি বা বেসরকারি পেনশন ফান্ড, দাতব্য তহবিল, বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, কর্পোরেশন, ধনী ব্যক্তি, বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ভেঞ্চার মূলধন যোগানদাতাদের সম্মিলিত বা একক তহবিল গঠনের মাধ্যমেও গড়ে তোলা সম্ভব।

আইনি কাঠামো: ২০১৫ সালের ২২ জুন প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস, ২০১৫-তে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংক্রান্ত একটি আইনি কাঠামো দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এ আইনে ‘অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ বা ‘ফান্ড’ বলতে  ট্রাস্টের আদলে যেকোন ‘প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড’ অথবা ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড’ অথবা ‘ইমপ্যাক্ট ফান্ড’ অথবা অন্য কোনো নামের ফান্ড সবগুলোকেই বোঝাবে।

তবে এই ফান্ডগুলোকে কমিশনের স্বীকৃতি পেতে হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, এই বিনিয়োগ উদ্যোগটি সক্ষম বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে তৈরি হয়। এখানে যারা তাদের বিনিয়োগ জমা করেন তাদের বিনিয়োগ-নীতির আলোকে কোথায় এবং কতটুকু বিনিয়োগ করা হবে তা নির্ধারিত হয়। এখানে শুধুমাত্র প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার বেচাকেনা হয়। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের শেয়ার বা ইউনিটগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে না। বাংলাদেশের বিদ্যমান পুঁজিবাজারের আইনি কাঠামো এবং নীতিমালার সঙ্গে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বেশ সাযুজ্যপূর্ণ।

শূন্যস্থান পূরণে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল: কিছু নতুন উদ্যোক্তা আছেন যাদের কাছে শুধুমাত্র নতুন আইডিয়া এবং প্রযুক্তিই একমাত্র মূলধন। প্রথাগত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের এ সব উদ্ভাবনী প্রচেষ্টায় এগিয়ে আসতে চায় না। ব্যাংকগুলো এসব স্টার্ট-আপে শুধুমাত্র তখনই লগ্নি করতে এগিয়ে আসে যখন উদ্যোক্তা বা কোম্পানির মালিকানায় প্রয়োজনীয় স্থাবর সম্পত্তি থাকে। কারণ, ব্যবসা মার খেলেও যেন ওইসব সম্পদ বিক্রি করে লগ্নিকৃত টাকা ওঠানো যায় ব্যাংকগুলো সে নিশ্চয়তা পেতে চায়। অথচ, বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনীতিতে বেশিরভাগ স্টার্ট-আপেরই স্থাবর সম্পদ থাকে না। অন্যদিকে ব্যাংক এবং পাবলিক ইকুইটিগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখভালের ব্যাপারে দায়বদ্ধ থাকে। এজন্য তারা সহায়-সম্বলহীন নতুন স্টার্ট-আপে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চায় না।

আবার, উল্লেখযোগ্য মুনাফার ইতিহাস না থাকলে একটি নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে প্রবেশের অনুমতিই পায় না। ফলে প্রথাগত ব্যাংকিং সিস্টেম এবং পুঁজিবাজার এই দুই জায়গা থেকেই স্টার্ট-আপগুলো বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এক্ষেত্রে স্টার্ট-আপে বিনিয়োগের শূন্যস্থান পূরণে এগিয়ে আসে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।

স্টার্ট-আপে বিনিয়োগের শূন্যস্থান পূরণের ক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সদস্যদের জন্য অথবা প্রাইভেট ইকুইিট ফান্ডগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্য একদিকে পর্যাপ্ত মুনাফার নিশ্চয়তা দিতে হয় এবং অন্যদিকে ভাল মুনাফা আসবে এমন আইডিয়ার স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের আকর্ষণ করতে হয়। সহজ কথায়, ধারাবহিকভাবে বড় মাপের মুনাফা করার জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসায় বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে।

 

তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের টাকা দীর্ঘমেয়াদের জন্য বিনিয়োগ করা হয় না। এখানে কৌশলটি হচ্ছে, উল্লেখযোগ্য আকার এবং গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়া পর্যন্ত নতুন কোম্পানির ব্যলান্স শিট বা সামগ্রিক হিসাবপত্র এবং অবকাঠামোয় বিনিয়োগ চলতে থাকে। এভাবে কোম্পানিটিকে একটি বৃহৎ কর্পোরেশনের কাছে বিক্রির উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর ওই কর্পোরেশনটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এই স্টার্ট-আপে প্রয়োজনীয় তারল্য সরবরাহ করতে পারে।

মূল কথা হল, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট একজন উদ্যোক্তার আইডিয়ার অংশীদারিত্ব কেনেন, এই আইডিয়াটিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পুষ্টি জোগান এবং ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকারের সহযোগিতা নিয়ে বিনিয়োগ তুলে নেন।

 

ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট আসলে কী করেন: ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের মূল কাজ হচ্ছে- নতুন এবং দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা। নতুন নতুন পণ্য বা সেবার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি করার জন্য সহযোগিতা করাও তাদের কাজ। তাছাড়া সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে নতুন কোম্পানির ভাবমূর্তি উন্নয়ন এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর কাজটিও তাদের। ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তার মতোই বেশি ঝুঁকি নিতে পরোয়া করেন না। কারণ, বেশি ঝুঁকি মানে বেশি মুনাফা।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বৈশ্বিক চিত্র: নতুন কোম্পানির পোর্টফোলিও উন্নয়নের মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা ভেঞ্চার তহবিলের বিনিয়োগের ঝুঁকি কমিয়ে আনেন। তবে প্রায় ক্ষেত্রেই ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা অন্যান্য পেশাদার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের সাথে যৌথভাবে বিনিয়োগ করেন। এতে বিনিয়োগ ঝুঁকি আরও কমে যায়। তাছাড়াও, বিভিন্ন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের যৌথ বিনিয়োগের বাইরে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা স্বতস্ফূর্তভাবে নতুন নতুন ফান্ড জোগাড় করতে থাকেন। গত কয়েক দশক ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা নতুন সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং উদ্যোক্তাগোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে সমর্থন দিয়ে এসেছে। ফলে আগের ওই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এখন বিশ্বজুড়ে দাপটের সাথে ব্যবসা করছে। তৈরি হয়েছে অগণিত কর্মসংস্থান। সাথে সাথে বেড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা। ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন, অ্যাপল, ফেডারেল এক্সপ্রেস, কমপ্যাক, সান মাইক্রোসিস্টেমস, ইন্টেল, মাইক্রোসফট, জেনেটেক এবং গুগলের মতো দানবীয় আকারের বহুজাতিক কোম্পানি ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের হাত ধরেই উঠে এসেছে। যদি কোম্পানিগুলো স্টার্ট-আপ থাকাকালীন ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সহযোগিতা না পেত তাহলে আজ হয়ত প্রযুক্তি জগতের এই মহারথীগুলোর দেখা মিলত না।

তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা যে শুধু স্টার্ট-আপেই বিনিয়োগ করেন তা নয়। কোনো কোম্পানির প্রাথমিক ধাপে বিনিয়োগের পাশাপাশি ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা যেকোন কোম্পানির বাণিজ্যিক জীবনচক্রের বিভিন্ন ধাপেও বিনিয়োগ করতে পারেন। একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই বা কোম্পানির যদি আদতেই কোনো পণ্য না থাকে তারপরও বিনিয়োগ করা হয় যাকে বলে ‘সিড ইনভেস্টিং’। যদি কোনো কোম্পানি মাঠে গড়ানোর পর এর প্রথম বা দ্বিতীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ করা হয় তাকে বলে ‘আরলি স্টেজ ইনভেস্টিং’। তাছাড়া যে কোম্পানিটি প্রয়োজনের তুলনায় কম সম্পদ ও জনবল নিয়ে চলছে তাকে আরও সফল করে গড়ে তুলতেও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা বিনিয়োগ করে থাকেন। একে বলে ‘এক্সপ্যানশন স্টেজ ইনভেস্টিং’।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা একটি কোম্পানির জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে ব্যবসার যেকোন পর্যায়ে বিনিয়োগ করেন। সেই সুবাদে ব্যবসার পরবর্তী পর্যায়ে বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হয়। এভাবে কোম্পানির সবরকম ঘাটতি পুষিয়ে ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত করা সম্ভব হয়। এরপর পুঁজিবাজারে প্রবেশ করার মতো সক্ষমতা অর্জন করে ফেলে এক সময়কার স্টার্ট-আপ কোম্পানি।

আবার, অন্যভাবে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা নতুন কোম্পানিটি অধিগ্রহণ অথবা একীভূত করে নেওয়ার জন্য অন্য কোম্পানিকে সুপারিশ করতে পারে। নতুন কোম্পানির মার্জার অথবা অধিগ্রহণের ফলে যে আয় হয় তা দিয়ে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের বিনিয়োগকারী, কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠাতারা তাদের নিজ নিজ বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য মুনাফাসহ ফেরত নিতে পারেন।

অন্যদিকে, কিছু ভেঞ্চার ফান্ড স্টার্ট-আপ কোম্পানির অধিগ্রহণ এবং বিক্রি করার মাধ্যমে নতুনভাবে লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মগুলো প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের নতুন নতুন কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহী। তবে কনস্ট্রাকশন, শিল্পপণ্য, বাণিজ্যসেবা ইত্যাদি খাতেও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বিনিয়োগ করে থাকে। কিছু কিছু ভেঞ্চার ফার্ম খুচরা বিক্রেতা কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য বিশেষায়িত। আবার কিছু ভেঞ্চার ফার্ম ‘সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ’ স্টার্ট-আপ কোম্পানিতে বিনিয়োগ পছন্দ করে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের গঠনপ্রণালী: ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ফান্ড ম্যানেজার, বিনিয়োগকারী, ট্রাস্টি এবং কোম্পানি।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ফান্ড ম্যানেজারের দায়িত্ব:বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন অনুযায়ী ফান্ড ম্যানেজারের দায়িত্ব হল- বিজ্ঞপ্তি, সার্কুলার, নীতিমালা এবং নির্দেশনাসহ প্রযোজ্য আইন মোতাবেক এবং ভেঞ্চার ফার্মের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ফান্ড সংগ্রহ করা, যাতে অবৈধভাবে নিজের এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ছাড়াই ইউনিটধারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা যায়।

ভেঞ্চার ফান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের আর্থিক লেনদেন করবেন ফান্ড ম্যানেজার। কোনো পোর্টফোলিও কোম্পানিতে ফান্ড ম্যানেজার, পরিচালক, কর্মকর্তা এবং ইনভেস্টমেন্ট কমিটির সদস্যবৃন্দের কোনো ধরনের বস্তুগত স্বার্থ থাকবে না। ফান্ড ম্যানেজার স্টার্ট-আপে বিনিয়োগের ঝুঁকি এবং মুনাফা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদেরকে ভালভাবে অবহিত করবেন। ফান্ডের ট্রাস্টিদের অনুমোদনক্রমে ফান্ড ম্যানেজার ‘ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফান্ড ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন’ তৈরি করবেন এবং সেই গাইডলাইন যথাযথভাবে মেনে চলবেন।

ফান্ড ম্যানেজার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের বিনিয়োগকারী এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বার্থগত সংঘর্ষ নিরসনের উদ্দেশ্যে কোড অব কন্ডাক্ট বা আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন করবেন।

ফান্ড ম্যানেজার বিদ্যমান আইন, নীতিমালা এবং চুক্তিপত্র অনুযায়ী ফান্ডের ইউনিটহোল্ডারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করবেন। ইনভেস্টমেন্ট গাইডলাইন, ইনভেস্টমেন্ট কমিটি এবং ট্রাস্টিদের অনুমতি সাপেক্ষে ফান্ড ম্যানেজার প্রত্যেকটি বিনিয়োগ করতে বাধ্য।

পোর্টফোলিও কোম্পানির কর্মকান্ড খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবেন ফান্ড ম্যানেজার। যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে কোম্পানির ম্যানেজমেন্টেও অংশ নিতে পারেন। তাছাড়া ওই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের প্রতিনিধিত্বও তিনি করতে পারেন। তবে তা হতে হবে ফান্ডের ট্রাস্টিদের অনুমোদন সাপেক্ষে। বিনিয়োগ নীতিমালা এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের কোনো বিষয় ট্রাস্টি এবং ইউনিটহোল্ডারদের বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কোনোভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না।

মূল্য নির্ধারণী কৌশল অনুযায়ী ফান্ডের মূল্যমান ঠিক করতে হবে। এই কাজটি বছরে কমপক্ষে দুইবার করতে হবে। এজন্য ট্রাস্টির পক্ষ থেকে ‘স্ট্যাটুটরি অডিটর’-এর বাইরে আলাদা এবং স্বাধীন ‘ভ্যালুয়ার’ নিযুক্ত করতে হবে।

ফান্ডের ভ্যালুয়েশন মেথডোলজি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট ইকুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ভ্যালুয়েশন গাইডলাইন অনুযায়ী হচ্ছে কি না তা দেখভাল করবেন ফান্ড ম্যানেজার। তবে এজন্যও ট্রাস্টির অনুমোদন লাগবে। মেথডোলজির পরিবর্তন হলে ফান্ডের বার্ষিক রিপোর্ট এবং চুক্তিপত্রে উল্লেখ করতে হবে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের ইউনিটহোল্ডাররা যদি কোনো বিশেষ সিদ্ধান্ত নেন তাহলে অনতিবিলম্বে কমিশনকে জানাতে হবে। সর্বোপরি, ফান্ড ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থ কার্যকরভাবে সুরক্ষার জন্য লিখিত নীতিমালা, পদ্ধতি বা কৌশলসমূহ যথাযথভাবে প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন করবেন।

ফান্ড ম্যানেজার কীভাবে তহবিল গঠন করবেন:ভেঞ্চার ফার্মের উদ্যোক্তা পরিচালক, ফান্ড ম্যানেজার, অনুমোদিত বিনিয়োগকারী এবং কোম্পানি যৌথভাবে তহবিল ব্যবস্থাপনা করবেন। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা পরিচালক, ফান্ড ম্যানেজার এবং অনুমোদিত বিনিয়োগকারীরা সম্ভাবনাময় কোম্পানিতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে তহবিল জোগাড় করবেন। এর বাইরে ওই কোম্পানির নিজেদের একটি ফান্ড থাকবে। এ দুইয়ে মিলে একটি বড় মূলধন সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী একটি ভেঞ্চার ফান্ডে প্রধান কিছু বিষয় থাকতে হবে। সেগুলো হচ্ছে- ফান্ডের ন্যূনতম পরিমাণ হতে হবে ১০ কোটি টাকা। এতে উদ্যোক্তা পরিচালক বা পরিচালকদের অংশ হতে হবে কমপক্ষে ১০ শতাংশ বা ১ কোটি টাকা। উদ্যোক্তা পরিচালকরা তাদের মোট ক্রয়কৃত অংশের কমপক্ষে ২০ শতাংশ (১০ শতাংশের মধ্যে ২০ শতাংশ) ফান্ডটি নিবন্ধিত হওয়ার আগেই কিনে নেবেন। ফান্ড ম্যানেজারের ন্যূনতম বিনিয়োগ হবে মোট পরিমাণের কমপক্ষে ২ শতাংশ। যদি ফান্ড ম্যানেজার ওই ভেঞ্চার ফার্মের উদ্যোক্তা পরিচালক হন, তাহলে এই ২ শতাংশের মালিকানা অতিরিক্ত থাকতে হবে।

তবে ফান্ড ম্যানেজার এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোনো সময়েই ফান্ডের মোট ইউনিটের ২৫ শতাংশের বেশি হাতে রাখতে পারবেন না। উদ্যোক্তা পরিচালক বা পরিচালকদেরকে ফান্ডের মোট পরিমাণের কমপক্ষে ২ দশমিক ৫ শতাংশ চলমান বিনিয়োগ হিসেবে রাখতে হবে। অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বা ভেঞ্চার ফান্ড ইউনিটহোল্ডারদের শুধু নগদ লভ্যাংশের তথ্য দেবে। এবং ইউনিট ইস্যুর দিন থেকে ফান্ডের সব বিনিয়োগ ৩ বছরের জন্য লক-ইন অবস্থায় থাকবে। অর্থাৎ এ সময় কেউ ইউনিট বিক্রি করতে পারবে না।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কীভাবে কাজ করে: আসলে সময়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা যত বিনিয়োগ করেছেন তার ৮০ শতাংশের বেশি কোম্পানিগুলোর গ্রোথের সময়ে করা হয়েছে। কোম্পানির জীবনচক্রে ব্যাপকভাবে প্রবৃদ্ধি হওয়ার এই সময়টায় বিনিয়োগের ফলাফল লাভ বা ক্ষতি যাই হোক না কেন দুটোই একইরকম। ভুল খাতে বিনিয়োগ এবং অপ্রচলিত বাজারের প্রাযুক্তিক ঝুঁকি দুটোই এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।

ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে এমন খাত বেছে নেওয়ার মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগের ঝুঁকির দায় কোম্পানির ব্যবস্থাপকদের উপর ছেড়ে দিতে পারে। তাছাড়া সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম মুনাফাসহ তাদের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার রাস্তা খুব সহজেই বের করে ফেলতে পারে। কারণ, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকাররা প্রতিনিয়ত উচ্চ-প্রবৃদ্ধির নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করেন। ফলে সম্ভাবনাময় খাত বিবেচনায় নতুন ওই কোম্পানি কিনে নিতে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকাররা পিছপা হন না। কারণ তাদের সামনে তখন বেশি লাভ, বেশি কমিশন।

যদি ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা বাজারের শীর্ষে ওঠা পর্যন্ত ওই কোম্পানির সাথে থাকেন, তাহলে সেখান থেকে বিপুল মুনাফা অর্জন করতে পারেন। অভিজ্ঞ ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ খাতে বিনিয়োগ করেন, যেখানে প্রথাগত উপায়ে স্বল্প পরিমাণ অর্থায়নও সহজে আকর্ষণ করা যায় না। ফলে তুলনামলক কম সময়ের মধ্যে তারল্য সরবরাহ করতে পারে এমন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যায়। তাছাড়া ভাল মুনাফা করা যায় বলে সফল ম্যানেজমেন্ট টিমকে বড় মাপের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হয়।

আদর্শ উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্য: ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের দৃষ্টিকোণ থেকে একজন আদর্শ উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তাকে এমন আইডিয়া পেশ করতে হবে যা সহজেই অন্যান্য বিনিয়োগকারীর সামনে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করা যায়। আইডিয়ার সাথে প্রাসঙ্গিক রেফারেন্স দিতে হবে। আইডিয়া হতে হবে আকর্ষণীয়। বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষতা এবং সক্ষমতা আছে এমন একটি দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে হবে এবং জনবল অনুযায়ী সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে। কাজের প্রতি পরিশ্রমী হওয়ার সাথে সাথে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছার প্রতি সহনশীল হতে হবে। সর্বোপরি, বিনিয়োগকৃত অর্থের খরচ এবং চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবধর্মী ফলাফল দিতে হবে।

বিনিয়োগের মুনাফা: ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের মুনাফা থেকে প্রত্যেক অংশীদারই লাভবান হন। বিএসইসির আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত ভেঞ্চার ফান্ডকে মোট সম্পদ মূল্য বা এনএভি-র শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বার্ষিক ফি দিতে হয়। ফি সংগ্রহ করে কমিশন। ট্রাস্টিরাও তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশন পাবেন। স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাকে চাহিদামতো মূলধন দেওয়া হয় এবং তার বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা গঠনতন্ত্রে বর্ণিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটি মুনাফা পান। লেনদেনের সব বিষয়ে ভূমিকা রাখার জন্য ফান্ড ম্যানেজার নির্দিষ্ট ম্যানেজমেন্ট ফি এবং বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত মুনাফাও পাবেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস ২০১৫ তে ফান্ড ম্যানেজারের ম্যানেজমেন্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা আছে।

একটি ইমপ্যাক্ট ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য ফান্ড ম্যানেজার মোট সম্পদ মূল্য বা এনএভির ৪ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক ম্যানেজমেন্ট ফি পেতে পারেন। একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য এনএভির সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ পর্যন্ত এবং একটি প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য এনএভির সর্বোচ্চ ২ শতাংশ ম্যানেজমেন্ট ফি নিতে পারবেন।

গঠনতন্ত্রে বর্ণিত শর্ত অনুযায়ী, ফান্ডটি যদি ন্যূনতম মুনাফার হার অর্জন করতে পারে তাহলে ফান্ড ম্যানেজার বার্ষিক মোট মুনাফার ২০ শতাংশ শেয়ার নিতে পারেন। ফান্ড ম্যানেজার তার নিজস্ব বিনিয়োগের উপর নগদ লভ্যাংশ নিতে পারবেন (ফান্ডে ২ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ থাকলে)।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডসমূহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে ফান্ড ম্যানেজার এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড লভ্যাংশ এবং মূলধন আয় দুটোই পেতে পারেন।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ঝুঁকি: ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সফলতার হার খুব বেশি নয়। ভাল বিজনেস প্ল্যান, দক্ষ জনবল এবং কার্যকর উদ্যোগের সমন্বয়ে একটি ব্যবসা গড়ে সাধারণত ১০ বারের মধ্যে মাত্র ১ বার সফলতার মুখ দেখতে পায়। সবচেয়ে ভাল কোম্পানির সফল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ।

বিনিয়োগের ব্যাপ্তিকাল: ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা নতুন কোম্পানিকে এগিয়ে নেয়, কিন্তু শেষমেষ তারা ৩ থেকে ৭ বছরের মধ্যে তাদের বিনিয়োগ মুনাফাসহ ফেরত নেন।

স্টার্ট-আপের একদম প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগ করা হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা ৫ থেকে ৭ বছর অপেক্ষা করেন। তবে ব্যবসার পরবর্তী ধাপের বিনিয়োগে মাত্র কয়েকবছর অপেক্ষা করে থাকেন। ভেঞার ক্যাপিটাল বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগে ঝুঁকির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হয়। তাছাড়া ব্যবসার মাঝখানে বিনিয়োগের মুনাফা টাকায় ভাঙ্গিয়ে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী, ভেঞ্চার ফান্ড অবশ্যই ৫ থেকে ১৫ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

উপসংহার: বাংলাদেশ জনবহুল হলেও এদেশের আছে ৩০ শতাংশের বেশি তরুণ উদ্যমী জনগোষ্ঠী। এই প্রজন্মের মধ্যে গতিশীল এবং সৃজনশীল আইডিয়া আছে যা কাজে লাগাতে পারলে দেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। বাংলাদেশে এই তারুণ্যের জোয়ার কমপক্ষে আগামী ২০ বছর পর্যন্ত নিত্যনতুন উদ্ভাবনী উদ্যোগের আইডিয়া দিয়ে যাবে। এই আইডিয়া কাজে লাগানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। অদূর ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মের এসব উদ্ভাবনী উদ্যোগের সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। এখনই ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বিশ্বে আমরাই হব অনুকরণীয় উদাহরণ। তাছাড়া দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতেও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অবাস্তব কোনো ভাবনা নয়; বরং এটাই এখন বাস্তবতা। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারুণ্যের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিকল্প খুব কমই আছে।

রেফারেন্স: এই লেখাটি তৈরি করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ অন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল-এর সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে।

লেখক: পরিচালক, অ্যাথেনা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড