পানিতে ভাসমান এক মসজিদের কাহিনী!

mosque

mosqueপৃথিবীতে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনার খবর আমরা দেখেছি কিন্তু কখনও শুনিনি পানিতে মসজিদ ভাসতে পারে। এবার এমনই এক মসজিদের কাহিনী রয়েছে আপনাদের জন্য।

পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি হলো ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান। যার কথা শুনলে মনে হবে বিশাল এক বাগান যেনো শূন্যে ঝুলে রয়েছে আর বাতাসে দোল খাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটি কিন্তু তা নয়। দূর হতে দেখলে মনে হবে ভেসে রয়েছে কিন্তু আসলে ভেসে নেই। এমন একটি মসজিদ রয়েছে মরক্কোয়।

বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান এই মসজিদটি তৈরি করেছেন ক্লাসাবাঙ্কা শহরে। মসজিদটির নির্মাণ কাজ করেন ফরাসি একটি কোম্পানির প্রকৌশলীরা। মসজিদটির নকশা তৈরি করেছিলেন বাদশা হাসানের ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনচিউ।

মসজিদটিকে ভাসমান মসজিদ বলার একটিই কারণ তা হলো মসজিদটির তিনভাগের একভাগ আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর অবস্থিত। দূরের কোনো জাহাজ হতে দেখলে মনে হবে, ঢেউয়ের বুকে মসজিদটি দুলছে আর মুসল্লিরা যেনো নামাজ পড়ছেন পানির ওপর। মসজিদটি কিন্তু ছোটখাটো নয়। এই মসজিদটিতে প্রায় ১ লাখ মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদটির মিনারের উচ্চতা ২০০ মিটার। আর মেঝে হতে ছাদের উচ্চতা ৬৫ মিটার। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, মসজিদের ছাদটি প্রতি ৩ মিনিট পরপর যান্ত্রিকভাবে খুলে যায়। যে কারণে মসজিদের ভেতরে প্রাকৃতিক আলো এবং মুক্ত বাতাস প্রবেশ করতে পারে। তবে বৃষ্টির সময় ছাদটি বন্ধ রাখা হয়।

বিশাল এই মসজিদটিতে ২২.২৪ একর জায়গার ওপর অবস্থিত। মসজিদের মূল ভবনের সঙ্গেই রয়েছে লাইব্রেরি, কোরআন শিক্ষালয়, ওজুখানা ও কনফারেন্স রুম। ২৫০০ পিলারের ওপর স্থাপিত এই মসজিদের ভেতরের পুরোটাই টাইলস বসানো। কোথাও কোথাও আবার সোনার পাত দিয়ে মোড়া। মসজিদ এলাকার আশপাশে সাজানো রয়েছে ১২৪টি ঝরনা ও ৫০টি ক্রিস্টালের ঝাড়বাতি।

এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৮৭ সালের আগস্টে। প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক ও কারুশিল্পীর দিনে দুই শিফট শ্রমের ফলে প্রায় সাত বছরে নির্মিত হয় এ মসজিদ। অত্যাধুনিক এই মসজিদটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় (তৎকালীন) ৮০ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মসজিদটির উদ্বোধন হয় ১৯৯৩ সালের ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর দিন।