নতুন সিম কেনার জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে সরকার। ১৬ ডিসেম্বর থেকে সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রচলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
এখন থেকে সব গ্রাহক নিজের অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার ও রিটেইলার শপ থেকে এই পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে ও নতুন সিম কিনতে পারবেন। সেখানে থাকা বায়োমেট্রিক ছাপ সংগ্রহের যন্ত্রে এই ছাপ নেওয়া হবে।
সিম কেনার ক্ষেত্রে আগে আঙুলের ছাপের দরকার হতো না। আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক হওয়ায় সিম ক্রেতাকে অবশ্যই হাজির থাকতে হবে। সম্প্রতি সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিটিআরসির কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
আঙুলের ছাপ ছাড়াও নতুন সিম কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া অন্য বৈধ পরিচয়পত্র দিয়ে মুঠোফোন সিম নিবন্ধন করা হলে এর মেয়াদ থাকবে সর্বোচ্চ ছয় মাস। এ সময়ের মধ্যে এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন না করলে চালু থাকা ওই সিমটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, এখন থেকে নতুন মুঠোফোন সংযোগ কেনার ক্ষেত্রে এনআইডিই ব্যবহার করতে হবে।
একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে বা ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০টি সিম রাখার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
এনআইডি ছাড়া পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র দিয়ে সিম কেনা যায়। কিন্তু আঙুলের ছাপ দিয়ে সিম নিবন্ধন করতে হলে এনআইডির কোনো বিকল্প নেই। নিবন্ধনের সময় একজন ব্যবহারকারী সঠিক তথ্য দিচ্ছেন কি না, তা যাচাই করার একমাত্র উপায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি তথ্যভান্ডার। এনআইডি ছাড়া অন্য বৈধ পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার সরকারের কাছে নেই।
নতুন সিম নিবন্ধন প্রসঙ্গে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের চীফ করপোরেট এ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘বিগত কয়েক দিনে সিম নিবন্ধনে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। গ্রাহকেরা খুই ইতিবাচকভাবে নিবন্ধন পক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছেন। গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে আমরাও সর্বাত্মক সহায়তার জন্য তৈরি আছি। আমাদের গ্রাহকদের জন্য এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
বিটিআরসির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে চালু থাকা মোট সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৯৬ হাজার।
নতুন সিম কিনতে সঙ্গে নিতে হবে:
১. পাসপোর্ট আকারের দুই কপি ছবি
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি (মূল কপি সঙ্গে রাখা ভালো)
৩. ব্যাকআপ ফোন নম্বর, ইমেইল অ্যাড্রেস প্রভৃতি তথ্য
মোবাইল অপারেটরদের সূত্রে জানা গেছে, নতুন সিম কেনার ক্ষেত্রে এই তথ্যগুলো আগেও লাগত, তবে এখন তা বাধ্যতামূলক। কেউ চাইলে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো ছবিযুক্ত শনাক্তকরণ আইডি ব্যবহার করে সিম কিনতে পারবেন। এর মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিলে সিম নিবন্ধন থাকবে তা না হলে সিম বন্ধ হয়ে যাবে।
যে বিষয়ে সচেতনতা দরকার:
১. অপরিচিত বা কারো ব্যবহৃত কোনো সিম কার্ড কেনার বিষয়ে সতর্ক থাকুন
২. কাগজপত্র ছাড়া সিম কার্ড কিনবেন না
৩. অপরিচিত কারও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সিম কার্ড কেনার বিষয়ে সচেতন থাকুন।
পাঠকের মতামত: