জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বড় ছেলে আলী আহম্মদ তাসদিদ জানিয়েছেন, তার পিতা তার (মুজাহিদ) বিরুদ্ধে দেয়া রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন।
আজ রোববার সকালে মুজাহিদের দাফন শেষে ফরিদপুরের আইডিয়াল মাদরাসা প্রাঙ্গণে উপস্থিত মুসল্লিদের তিনি একথা জানান। তাসদিদ বলেন, আমার পিতা সারাজীবন কোরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সারাজীবন আন্দোলন করে গেছেন। কারো কাছে ভিক্ষার আবেদন তিনি করেননি। রাষ্ট্রপতির কাছেও প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি।
প্রিয় ফরিদপুরবাসী সম্বোধন করে তাসদিদ বলেন, আজ আমরা আপনাদের মাঝে আপনাদের প্রিয় নেতাকে রেখে গেলাম। তার দোয়া আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে এসেছি। যে ময়দানে আজ আমরা উনাকে (মুজাহিদ) রেখে গেলাম, তার পাশেই যে মসজিদ সেখানে তিনি প্রতি রমজানে ইতেকাফ করতেন আপনারা সাক্ষি।
ওনার পিতা এটি ওনাকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য ওয়াকফ করে গেছেন। উনি (মুজাহিদ) উনার জীবনে উনার সামর্থ্য অনুযায়ী কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী এই সমাজকে গড়ার লক্ষ্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। যার সাক্ষি আপনারা। তারই ফলশ্রুতিতে আজকে বাতিলের কোপানলে পড়ে আল্লাহর দরবারে উনি শাহাদাতের মর্যাদা নিয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। উনি আপনাদের সবাইকে সালাম জানিয়েছেন, দোয়া করেছেন।
তিনি আরো বলেন, দুটি বিষয় আমি উনার পক্ষ হতে এ মুহূর্তে না বলেই পারছি না। উনার বিরুদ্ধে যারা সাক্ষি দিয়েছেন এই মাটির, তাদের মধ্যে দু’জন বাদে সবাই নিতান্ত বাধ্য হয়ে, গরিবী হালতে বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উনি তাদের সবাইকে মাফ করে দিয়েছেন। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, উনি কোনো মার্সি পিটিশন করেননি। আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে উনি আমাদের জানিয়েছেন উনি কোনোরকম মার্সি পিটিশন করেননি। উনি কেবলমাত্র প্রথা বজায় রাখার জন্য এবং কারা কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি চিঠি লিখেছিলেন। যার মধ্যে এসব বিচারব্যবস্থার ত্রুটি, অযৌক্তিতা এবং অন্যায্যতা এগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন।
এসময় জামায়াতের অঞ্চল দায়িত্বশীল দেলোয়ার হোসেন, সহকারী অঞ্চল দায়িত্বশীল সামসুল আলম বরাটি, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, সেক্রেটারি মওলানা বদরুদ্দিন বক্তব্য দেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাতিলের বিরুদ্ধে হকের পথে কথা বলার জন্য যুগে যুগে অনেক নবি রাসুলকে হত্যা করা হয়েছে।
এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনে তার এ আত্মদান অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আল্লাহ তাকে শহীদের মর্যাদা দান করুন।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত
পাঠকের মতামত: