বাংলাদেশে ফেসবুক খুলে দেয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার মানব বন্ধন করেছে ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা করেন এরকম নানা শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।
দেশটিতে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সরকার ফেসবুকসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ করে রেখেছে।
ফেসবুকের মাধ্যমে যারা ব্যবসায়িক লেনদেন করেন তারা বলছেন, এরই মধ্যে তাদের কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
‘ফ্রি ফেসবুক ইন বাংলাদেশ’এই দাবি নিয়ে শাহবাগের জড়ো হন এই ব্যবসায়ীরা।
তাদের মধ্যে অনেকই বই বিক্রেতা, অনেকই আবার পোশাক বিক্রি করেন এই ফেসবুকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ফেসবুক বেশ জনপ্রিয় হওয়ায় এটাকে অনেকেই ব্যবহার করছেন অনলাইন ব্যবসার মাধ্যম হিসেবে।
ইফতেখার আহমেদ- বইনিউজ.কম নামে একটি পেজ তৈরি করে ফেসবুকের মাধ্যমে বই বিক্রি করেন তিনি। মি. আহমেদ বলেছেন, “ আমরা প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকার বই শুধু ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করি, এভাবে আর কয়েকদিন বন্ধ থাকলে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হবে।”
কেউ কেউ ব্যবসার একটি নাম দিয়ে ফেসবুক পেজ তৈরি করে, সেই পেজে নির্দিষ্ট পণ্যের ছবি, দাম লিখে দেন। আগ্রহী ক্রেতারা সেই পেজে লিখে দেন পণ্যটি তিনি কিনতে চান। পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ক্রেতার ঠিকানায় পৌছে যায় পণ্যটি ।
ঢাকার মিরপুরের ব্যবসায়ী সাঈদ উজ্জ্বল, ফেসবুকে ‘সাদাসিধা’ নামে একটি পেজে বছর খানেক ধরে পোশাক বিক্রি করেন। প্রতিমাসে পোশাক বিক্রি করে তার আয় হয় প্রায় দুই লক্ষ টাকা তিনি বলছিলেন “আমার দু’জন কর্মচারী আছে যারা ডেলিভারির কাজ করে, বিক্রি একদম বন্ধ এখন কর্মচারীদের বেতন দেয়া কষ্ট হচ্ছে, দুই সপ্তাহে ক্ষতি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।”
ফেসবুকে শুধু যে বই, পোশাক কেনাবেচা হচ্ছে তাই না, প্রতিদিনকার কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে নানা প্রসাধনী, ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য কেনারও সুযোগ তৈরি করেছেন অনেকে। ফেসবুক খোলা থাকার সময় অনেক ক্রেতা আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু হঠাৎ করেই ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পণ্যগুলো এখনও পরে রয়েছে।
বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখের মত। আর এই ফেসবুকে নানা পণ্যের বিক্রির এমন পেজের সংখ্যা কয়েক হাজার।
জাহিদ হাসান নামে একজন ফেসবুক ব্যবসায়ী বলেছেন, “সরকার ফেসবুক খোলা রেখেও নিরাপত্তা দিতে পারতো, তারা যে যুক্তিটি দিচ্ছেন সেটা একেবারেই খোড়া যুক্তি।” ফেসবুকের মাধ্যমে কেনাবেচা শুধু যে রাজধানীভিত্তিক তাই না, ঢাকার বাইরে অনেকে এর মাধ্যমে ব্যবসার করেন, আবার দেশের বাইরে থেকে অর্ডার আসলে সেগুলো তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঠিয়ে দেন।
এই বেচাকেনার প্রক্রিয়াগুলো হয় যে ফেসবুকে সেই ফেসবুক দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্ধ থাকায় তাদের ব্যবসা যে ধস নেমেছে সেটা বেশ পরিষ্কার।
সুত্রঃ বিবিসি
পাঠকের মতামত: