ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পরিচয় সংকটে বিএনপি নেতারা!

bnp-leader

bnp-leaderজাতীয় কাউন্সিলের দুই মাস পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি বিএনপি। সম্মেলনের আগেই দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। এর পর তিন দফায় ৪২ নেতার নাম ঘোষণা করেছে দলটি।

এখন পর্যন্ত ঘোষণা করা সাত যুগ্ম মহাসচিব ও নয় সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে নতুন মুখ ১৩ জন। জানা গেছে, এই দুই পদের সংখ্যা আর বাড়ছে না। ফলে দুই পদে আগে ছিলেন কিন্তু নতুন করে কোনো পদ পাননি, এমন নেতারা অনেকটা ‘পরিচয় সংকটে’ ভুগছেন। এ নিয়ে ওই সব নেতার সমর্থকরাও বিপাকে।

এ কারণে এমন নেতাদের কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলীয় কর্মসূচিতে খুব একটা দেখা মেলে না।

‘পরিচয় সংকটে’ থাকা নেতারা ব্যক্তিগত আলাপে এ জন্য দায়ী করছেন কমিটি ঘোষণায় বিলম্বকে। তাদের প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব দলে প্রত্যেকের অবদান মূল্যায়ন করে কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ইতিমধ্যে ঘোষিত যুগ্ম মহাসচিবরা হলেন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবউন-নবী খান সোহেল, হারুন অর রশীদ ও আসলাম চৌধুরী।

গত কমিটির যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে শুধু খোকন নতুন কমিটিতে রয়েছেন। আর গত কমিটির রুহুল কবির রিজভীকে করা হয়েছে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

গত কমিটির যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যাপারে এখনো ফয়সালা হয়নি। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ উচ্চপদে যেতে পারেন বলে আলোচনা আছে। কিন্তু কমিটির বাকি পদের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এসব নেতার পাশে যুগ্ম মহাসচিব পদবি থাকছে।

একজন যুগ্ম মহাসচিবের সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকেন, এমন একজন ছাত্রদল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “নেতার নামের আগে ‘সাবেক’ না ‘বর্তমান’ যুগ্ম মহাসচিব পদবি আছে তাই জানি না। এটা বিব্রতকর।”

বিষয়টি নিয়ে একাধিক যুগ্ম মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। তিনজনের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের বাইরে।

তবে আমান উল্লাহ আমানের ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, “বিএনপিতে আমান উল্লাহ আমানের পরিচয় লাগে না। কারণ তিনি কখনো পদ-বাণিজ্য করেননি।”

নতুন কমিটির বিষয়ে তার (আমান) মনোভাবের কথা জানতে চাইলে ওই ঘনিষ্ঠজন বলেন, “বিএনপির চেয়ারপারসন যেখানে রাখবেন সেখানেই তিনি কাজ করবেন। একটা কথা সবাই জানে, বিএনপিতে আমান উল্লাহ আমান কোনোদিন পদ চাননি।”

আর যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে একজন বলেন, “ভাই নোয়াখালীতে নির্বাচনী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তাই কোনো কথা বলতে পারবেন না।”

কখন তাকে অবসর পাওয়া যেতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা ঠিক বলতে পারছি না। তবে সম্ভাবনা কম।”

অন্যদিকে নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন ফজলুল হক মিলন (ঢাকা), নজরুল ইসলাম মঞ্জু (খুলনা), রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু (রাজশাহী), আসাদুল হাবিব দুলু (রংপুর), শাহাদাত হোসেন (চট্টগ্রাম), সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স (ময়মনসিংহ), সাখাওয়াত হাসান জীবন (সিলেট), বিলকিস শিরীন (বরিশাল) ও শামা ওবায়েদ (ঢাকা/ফরিদপুর)।

এই পদে ফজলুল হক মিলন ও আসাদুল হাবিব দুলু ছাড়া বাকি সবাই নতুন। ‘পরিচয় সংকটে’ আছেন দুজন্- গোলাম আকবর খোন্দকার, মশিউর রহমান।

গত কমিটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে পদ-পদবি নিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে বিব্রতবোধ করেন তিনি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “পরিচয় সংকট তো অবশ্যই। এখন কবে নাগাদ কমিটি হবে তা তো জানি না। তবে কমিটি ঘোষণা হলে এই অবস্থার থেকে মুক্তি পেতাম।”(সৌজন্যেঃ ঢাকাটাইমস)

পাঠকের মতামত: