ব্যাপক নিরাপত্তার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে চলমান বায়োমেট্রিক পদ্ধিতে সিম পুনঃনিবন্ধনে বাংলালিংক ও টেলিটকের ডাটা হ্যাক করার দাবী করেছে দেশের জনপ্রিয় একটি হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার্স (বিবিএইচএইচ)। বিবিএইচএইচ নামের সংগঠনটি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের সাথে এ সংক্রান্ত কয়েকটি স্ক্রিনশর্ট দিয়েছে। তবে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ বলছেন, তাদের সাইট হ্যাক করে ডাটাবেইজ হ্যাক করার খবর গুজব ছাড়া কিছুই নয়।
হ্যাকার সংগঠনটি বলছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে দেশের ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে; অপেক্ষায় আরো কয়েক কোটি ব্যবহারকারী। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বিবিএইচএইচ এর গঠনতন্ত্রে তার মেম্বারদের জন্য দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানর আইটি সিস্টেম-ওয়েব সাইট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা হ্যাক নিষিদ্ধ ছিল। ইনফরমেশন সিকিউরিটি নিয়েই যেহেতু আমাদের কাজ এবং এই দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে বায়োমেট্রিক প্রদ্ধতির নিরাপত্তা নিয়ে প্রথম থেকেই শংকিত ছিলাম। সেই শংকা থেকেই এবং এতো বেশী অংকের মানুষের তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা থেকেই আমাদের গ্রুপ বায়োমেট্রিক প্রদ্ধতির নিরাপত্তা সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে যাতে বড় ধরনের ডাটা লিক ঠেকানো যায়।
বিবিএইচএইচ লিখেছে, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। কিন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার শুরুতেই বায়োমেট্রিক সিস্টেমে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের সিকিউরিটি ফল্ট (বাগ) আমাদের নজরে আসে। আমরা সাকসেসফুলী বায়োমেট্রিক সিস্টেমের নিরাপত্তা ভাংতে সক্ষম হই এবং হ্যাক হয় বায়োমেট্রিক সিস্টেম। হ্যাক এর প্রমানস্বরুপ স্ক্রিনশট সাথে দেয়া হল।সংগঠনটি দাবি করেছে, দেশের স্বার্থে আমরা সিস্টেমের বাগ পাবলিকলি এক্সপোজ করছি না। সিস্টেমের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সরকারি স্পেশালিস্ট কেউ সম্পূর্ণ বাগ রিপোর্ট এবং অধিকতর নিরাপদ বায়োমেট্রিক সিস্টেম গড়ে তুলতে সহযোগিতার জন্য বিবিএইচএইচ সব সময় প্রস্তুত আছে। তারা জানিয়েছে, বায়োমেট্রিক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংশ্লিষ্ট টিম লিডার ছিলেন বিবিএইচএইচ-এর মডারেটর ‘হোয়াইট ড্রাগন’।
এ ব্যাপারে জানতে বাংলালিংকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার হিসেবে শিহাব আহমাদের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তাঁর নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। একই প্রতিষ্ঠানের পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আংকিত সুরেকার সাথে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এসএমএস দিলেও তার রিপ্লাই দেননি। তবে তাদের পিআর প্রতিষ্ঠান কনসিটো পিআর-এর হেড অব পিআর পার্থ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বাংলালিংকের সাইট হ্যাক করে ডাটাবেইজ ফাঁস করার খবর গুজব ছাড়া কিছুই নয়। এ বিষয়ে একটি স্টেটমেন্ট শিগগির দেওয়া হবে বলেও তারা জানান।
এদিকে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও মোবাইল ফোন অপারেটরের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব নুরুল কবীরের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ফোন রিসিভ করলেও মিটিং-এর কারণে কথা বলতে পারছেন না বলে জানান।
বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খানের সাথে এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। নিয়মের মধ্যে যা আছে তার বাইরে কোন কিছু ঘটলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।