গায়ানায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেসে খেলেই ৪৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। স্কোরকার্ড বলছে বাংলাদেশের করা ২৭৯ রানের বিপরীতে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থেমেছে ২৩১ রানে। এটুকুতে ধারণা জন্মাতেই পারে যে বাংলাদেশের ইনিংস ছিল সহজ ও সুন্দরভাবে সাজানো।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। টাইগারদের এই ২৭৯ রান করতে সংগ্রাম করতে হয়েছে বিস্তর। স্বভাববিরুদ্ধ ইনিংস খেলেছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। শেষদিকে ঝড় তুলে দিয়েছেন মুশফিকুর রহীম। সবমিলিয়ে ৫০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ৪ উইকেটে ২৭৯ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে ২৫৮ বলে ২০৭ রানের জুটি গড়েছেন সাকিব ও তামিম। ১৪৬ বলে সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের পক্ষে মন্থরতম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন তামিম। শেষ পর্যন্ত ১৬০ বলে ১৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন তামিম। অন্যদিকে ৯৭ রানের ইনিংস খেলতে ১২১ বল খেলেছেন সাকিব।
ফলে প্রাথমিকভাবে এই দুজনের মন্থর ইনিংসের বেশ সমালোচনা শোনা গিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের মতে পরিস্থিতি বুঝে সেরা ক্রিকেটটাই খেলেছে সাকিব-তামিম জুটি। সোমবার সংবাদ মাধ্যমের সাথে আলাপকালে একথা জানান তিনি।
‘যেমন দরকার ছিল ঠিক তেমনটাই খেলেছে সাকিব ও তামিম। গায়ানার ওই উইকেটে তেড়েফুঁড়ে মারতে গেলেই উইকেট পড়তো। তখন নতুন ব্যাটসম্যান এসে মারতে পারতো না। আমার ধারণা ছিল ২৪০ হলেই আমরা জিতে যাবো।’
হতাশাময় টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের এই জয় দলের জন্য বেশ স্বস্তির বলে মনে করছেন সুমন। তার মতে টেস্ট সিরিজে যেমন খেলেছে বাংলাদেশ তা মূলত টাইগারদের আসল চেহারা নয়। তাই এক-দুই সিরিজ খারাপ গেলেই ‘গেলো গেলো’ রব তোলার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুমন বলেন, ‘টেস্ট সিরিজের পর এই জয়টা নিঃসন্দেহে দারুণ স্বস্তির। টেস্ট সিরিজে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। সবাই জানে ওটা আমাদের ন্যাচারাল ক্রিকেট নয়। আসলে একটা সিরিজে একটু খারাপ হলে চারিদিকে নানান কথা শুরু হয়ে। এটা ঠিক নয়। এই খেলোয়াড়রাই দীর্ঘদিন ধরে পারফর্ম করে আসছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি বেশি খুশি এই কারণে যে যে ফরম্যাটে আমরা সবচেয়ে ভালো খেলি সেটাতেই আমরা ভালো করেছি। সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ আছে তাই এই ফরম্যাটে ভালো করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আত্মবিশ্বাসটা খুব কাজে আসবে।’
এসময় সাকিব-তামিমদের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং নিয়েও কথা বলেন বাংলাদেশের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক। গায়ানার কন্ডিশন অনুযায়ী বোলিং করাতেই সাফল্য ধরা দিয়েছে বলে অভিমত সুমনের। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি দেখেন আমরা কিন্তু কন্ডিশন অনুযায়ী একদম ঠিকঠাক বোলিং করেছি। গায়ানার কন্ডিশনও অনেকটা আমদের মতোই। ২০০৭ সালে আমরা সেখানে খেলেছিলাম। তবে এবার কন্ডিশন নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলাম। বোলাররা কন্ডিশনটা খুব ভালো মতো ব্যবহার করতে পেরেছে। সবমিলিয়ে আমি দারুণ খুশি।’