ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য প্রথমবারের মতো একটি ওষুধ বাজারে আনার সবুজ সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৬০ বছরের মধ্যে এই প্রথম ট্যাফেনোকুইন নামের এক ধরনের ট্যাবলেটকে সবুজ সংকেত দিলো দেশটি।
এই ওষুধটি বিশেষভাবে কাজ করবে একবার ম্যালেরিয়া হওয়ার পর শরীরে তার জীবাণু আবার জেগে ওঠা ঠেকাতে।
বিশ্বে এ ধরনের ম্যালেরিয়াতে প্রতিবছর আক্রান্ত হন প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ।
এই ম্যালেরিয়াকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ পুনরায় জাগ্রত হওয়ার আগে লিভারের মধ্যে এটি বহু বছর ধরে থেকে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখন এর চিকিৎসায় ট্যাফেনোকুইনকে বড় অর্জন হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখন বিবেচনা করে দেখবে তাদের দেশের মানুষের জন্য ওষুধটি দেয়া যায় কি-না। পুনরায় জেগে ওঠতে পারে এমন ম্যালেরিয়ার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। মশার কামড়ের মাধ্যমে এটি একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে থাকে।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ট্যাফেনোকুইনকে অনুমোদন দিয়েছে। বলা হচ্ছে,এটি লিভারে লুকিয়ে থাকা ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধ্বংস করে আবারো ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়া থেকে ঠেকাবে ট্যাফেনোকুইন।
একইসঙ্গে কেউ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলে অন্য ওষুধের সাথেও এটি সেবন করা যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় ওষুধ কোর্স সেবন করতে হবে।
এফডিএ বলছে, নতুন এই ওষুধটি খুবই কার্যকরী এবং ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে যা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
যেমন এনজাইম সমস্যায় ভুগছেন এমন কারও এই ওষুধ সেবন করা উচিত নয় বলে মনে করছেন তারা। আবার মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন তেমন কারও জন্য বেশি মাত্রায় এই ওষুধ হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও এসব সতর্কতার পরেও সবাই আশা করছেন, অন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সাথে এই ওষুধটি ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় দারুণ ভূমিকা রাখবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিক প্রাইস তাই একে বলছেন, ৬০ বছরের মধ্যে ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য অর্জন।
ওষুধ হিসেবে ট্যাফেনকুইন আছে সত্তরের দশক থেকেই কিন্তু লিভারে থাকা ম্যালেরিয়ার জীবাণু থেকে রক্ষা পেতে এটিকে নতুন করে নেয়া হলো।