ঢাকা,সোমবার, ৬ মে ২০২৪

কী করবেন যদি কেউ বিষপান করে?

suicide-poisoned

suicide-poisonedচরম বৈচিত্র্যময় মানুষের জীবন। জীবনের প্রতিটি মুহুর্তেই করতে হয় যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে কেউ পায় আর কেউ হারায়। যারা পান না তারা ভোগেন হতাশায়। আর এইসব হতাশাগ্রস্থ ব্যাক্তিরাই নিজেদের সব হতাশা দূর করতে চান নিজের জীবনহরনের মাধ্যমে। বেছে নেনে আত্মহত্যার পথ।

অনেকেই বিষপান করেন, কেউ বা ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখা অসম্ভব। কিন্তু তার পরও পরিস্থিতি তো সামাল দিতে কিছু করনীয় আছে।

কেউ যদি বিষপান করেন বা এ জাতীয় কোনো ওষুধ সেবনে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান, তাহলে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে—দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনো হাসপাতালে নিতে হবে। অনেকে মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে বাড়িতে ওঝা বা হাতুড়ে এনে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার চেষ্টা করে মূল্যবান প্রাণ নষ্ট করেন।

মনে রাখবেন, বিষপানের পর এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আনতে পারলে চিকিৎসকদের চিকিৎসা করা সহজ হয়। কারণ, এ সময়ের মধ্যে এলে পাকস্থলী থেকে অশোষিত বিষ বের করার জন্য স্টোমাক ওয়াশ (পাকস্থলী পরিষ্কার) করা যায়। এ সময়ের পর হাসপাতালে এলে স্টোমাক ওয়াশ করালে যতটা লাভ হওয়ার কথা, সে পরিমাণ হয় না।

তবে মাথায় রাখবেন, সব ধরনের বিষ বা ওষুধ সেবনে স্টোমাক ওয়াশের দরকার নেই। কোন ক্ষেত্রে পরিষ্কার করতে হবে, সেটি চিকিৎসকই ঠিক করবেন। চিকিৎসককে স্টোমাক ওয়াশ করার জন্য অযথা জোরাজুরি করবেন না।

আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কীটনাশকজাতীয় বিষ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করা হয়। এ বিষ শরীরে বা কাপড়চোপড়ে লাগলে সেখান থেকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে বিষক্রিয়া হতে পারে। তাই বিষপান করলে কাপড়চোপড় খুলে শরীর পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে পারেন।

বিষপান করলে অনেকেই গোবরমিশ্রিত পানি পান করিয়ে বমি করানোর চেষ্টা করেন। এটি ঠিক নয়। যদি বিষপান করা ব্যক্তি অচেতন বা অবচেতন অবস্থায় থাকে, তাহলে বমি ফুসফুসে চলে যেতে পারে; এতে ঝুঁকি আরো বাড়ে। কেরোসিন, অ্যাসিড পান করিয়ে বমি করানোর চেষ্টা করবেন না। এতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ওষুধ সেবন করলে ব্যবহৃত ওষুধের খোসা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসুন। চিকিৎসা দিতে সুবিধা হবে। শিশুরা ভুল করে ওষুধ সেবন, অ্যাসিড সেবন বা বিষপান করতে পারে। তাই এগুলো হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।

একটি কথা মাথায় রাখবেন, যে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, সে এটা বারবারই করবে। তাই দেরি না করে সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

পাঠকের মতামত: