juma-salahইসলামের ৫ টি স্তম্ভের মধ্যে একটি নামাজ। বলা হয়েছে, ‘একমাত্র মানুষ এবং জীন জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদতের জন্য।’ আর এই ইবাদতের অন্যতম মাধ্যম নামাজ। ঈমানের পরে সর্বোত্তম ইবাদত হলো নামাজ।

সাপ্তাহিক জুমা’আর দিন হলো গরীবের হজের দিন। কে বলা হয় গরীবের হজ। যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত পড়েন না তারাও জুমার দিন মসজিদে আসেন। সুতরাং নামাজের প্রয়োজনীয়তা এবং নামাজ পরিত্যাগকারীর অবস্থা কী হবে তার কিছু বিবরণ তুলে ধরা আবশ্যক-

আল্লাহ তাআলা সুরা মরিয়মে উল্লেখ করেছেন, ‘অতঃপর তাদের পরে আসলো পরবর্তী অপদার্থ লোকগুলো। তারা নামাজ নষ্ট করলো এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হলো। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতার শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা তওবা করেছে, বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সুতরাং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের উপর কোনো জুলুম করা হবে না।’ (আয়াত ৫৯-৬০)

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নামাজ নষ্ট বলতে বুঝিয়েছেন, নামাজ ছেড়ে দেয়া নয়, বরং নির্দিষ্ট সময়ের পরে নামাজ আদায় করা। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্বন্ধে বেখবর। এ আয়াতের ব্যাপারে হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ আয়াতের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, অর্থাৎ যারা তাদের নামাজের সময় বিলম্বিত করে। এ ধরনের লোকদিগকে কুরআনে নামাজি হিসেবে উল্লেখ করা সত্ত্বেও নামাজ আদায়ে অলসতা প্রদর্শনের জন্য তাদেরকে ‘ওয়াইল’ বা কঠিন শাস্তির সতর্ক বাণী শোনানো হয়েছে।

নামাজে বিলম্বকারীদের শাস্তি যদি এতো ভয়াবহ হয়, তবে যারা নামাজ পড়েন না তাদের অবস্থা কেমন হবে? এ জন্য আল্লাহ তাআলা এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের ব্যাপারে অগণিত অসংখ্য আয়াতে এবং হাদিসে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত (নিক্ষেপ) করেছে? তারা বলবে- আমরা নামাজ পড়তাম না।’ (সুরা মুদাসসির : আয়াত ৪২-৪৩)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কতো কঠিন ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের এবং অমুসলিমদের মাঝে (পার্থক্য সূচিত করে) নামাজের প্রতিশ্রুতি; যে নামাজ পরিত্যাগ করেছে, সে কাফির হয়েছে। অন্য হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘মুমিন বান্দা এবং কাফিরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ পরিত্যাগ করা।’

আজকের সমাজে মুসলিম উম্মাহ কেন এতো দুর্দশাগ্রস্ত, শান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। অথচ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতোক্ষণ না তারা মুখে উচ্চারণ করবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে ও জাকাত পরিশোধ করবে। এরূপ করলে তারা আমার পক্ষ হতে জান-মালের নিরাপত্তা লাভ করবে। এগুলোর হক নিয়মিতভাবে আদায় করতে হবে, ফলে তাদের হিসাব আল্লাহর জিম্মায় থেকে যাবে। (বুখারি ও মুসলিম)

তিনি আরও বলেন, যারা সঠিকভাবে নামাজের হিফাজত করবে, কিয়ামতের দিন এটা তাদের জন্য আলোকবর্তিকা, পথের দিশারী ও মুক্তির কারণ হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নামাজের হিফাজত করবে না, তার জন্য আলোকবর্তিকা হবে না, মুক্তির দিশারী হবে না, কিয়ামাতের দিন কারুন, হামান, ফিরাউন ও উবাই ইবনে খালফের সঙ্গে তাদের উত্থান হবে। (মুসনাদে আহমদ) নামাজের সুফল এবং কুফলের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। আসুন নামাজের প্রতি যত্নবান হই।